কক্সবাজার ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগ প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’সহ ৪ সিদ্ধান্ত সব ছাত্র সংগঠনের

নিজস্ব সংবাদদাতা :
  • আপডেট সময় ১২:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ফটো

ডেস্ক নিউজ :

আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে জিরো টলারেন্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব ছাত্র সংগঠন। তারা বলেছে, কোনো ফরমেটেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। এছাড়া আজ মঙ্গলবার থেকে এক সপ্তাহব্যাপী ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি’ পালন করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবিও এতে জানানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ে প্রশাসন থেকে আওয়ামী রাজনৈতিক সুপারিশে নিযুক্তদের বাদ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো পরিশুদ্ধ করার দাবিও জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ফিরে আসা ঠেকানোর প্রয়াস হিসেবে ১৯টি ছাত্রসংগঠনের সাথে সোমবার রাতে জরুরি আলোচনা সভা করেছে তারা। ‘চলমান দ্বন্দ্ব ও সংঘাত’ নিরসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত এই সভায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদসহ ১৯টি ছাত্রসংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সোমবার রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা হয়।

বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমাসহ নির্বাহী কমিটির সদস্যরা সভায় অংশ নেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতা আবদুল ওয়াহেদ প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বৈঠকের পরে বলেন, বাংলাদেশে যে দাবির আন্দোলনের মৌসুম চলছে, তাতে আওয়ামী লীগের ব্যাপক অর্থায়ন রয়েছে। কোনো ফরমেটেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। জিরো টলারেন্স টু আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদের বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আওয়ামী প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যেই এসেছে। তাই সরকারকে আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদেরকে বাদ দিতে হবে।

হাসনাত বলেন, গত ১৬ বছরের দুঃশাসনে আওয়ামী লীগ টাকা পাচার করে দেশের ব্যাংকগুলোকে খালি করেছে। আপনারা জানেন একজন এমপিরও বিদেশে তিন শতাধিক বাড়ি রয়েছে। আমরা আজকের বৈঠকে সবাই একমত হয়েছি যে, দ্রুততম সময়ে সেসব এমপি-মন্ত্রীদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আমরা দেখছি বিদেশে বসেও তারা দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা না হলে, এভাবে তারা ষড়যন্ত্র করতেই থাকবে এবং একের পর এক দেশে নানা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের একতা এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তা নষ্ট করতে অনেকেই ষড়যন্ত্র করছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট হয়, আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নষ্ট হয় এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।

ছাত্র পরিচয়ে আন্দোলনে অনেকে নাশকতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক দিন যাবত দেখছি আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এমনকি একইসময়ে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। ছাত্র পরিচয়ে লুঙ্গি পরা ব্যক্তিরাও এসে শিক্ষার্থীদের পেটাচ্ছে, যাদেরকে যে কেউ দেখলেই বুঝতে সক্ষম তারা কারা।

আগামী এক সপ্তাহব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনে ঠেকাতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক মেলবন্ধন অক্ষুণ্ন রাখতেই আমরা সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আ.লীগ প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’সহ ৪ সিদ্ধান্ত সব ছাত্র সংগঠনের

আপডেট সময় ১২:৪৬:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ডেস্ক নিউজ :

আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে জিরো টলারেন্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব ছাত্র সংগঠন। তারা বলেছে, কোনো ফরমেটেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। এছাড়া আজ মঙ্গলবার থেকে এক সপ্তাহব্যাপী ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি’ পালন করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবিও এতে জানানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ে প্রশাসন থেকে আওয়ামী রাজনৈতিক সুপারিশে নিযুক্তদের বাদ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো পরিশুদ্ধ করার দাবিও জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ফিরে আসা ঠেকানোর প্রয়াস হিসেবে ১৯টি ছাত্রসংগঠনের সাথে সোমবার রাতে জরুরি আলোচনা সভা করেছে তারা। ‘চলমান দ্বন্দ্ব ও সংঘাত’ নিরসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত এই সভায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদসহ ১৯টি ছাত্রসংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সোমবার রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা হয়।

বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমাসহ নির্বাহী কমিটির সদস্যরা সভায় অংশ নেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতা আবদুল ওয়াহেদ প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বৈঠকের পরে বলেন, বাংলাদেশে যে দাবির আন্দোলনের মৌসুম চলছে, তাতে আওয়ামী লীগের ব্যাপক অর্থায়ন রয়েছে। কোনো ফরমেটেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। জিরো টলারেন্স টু আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদের বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আওয়ামী প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যেই এসেছে। তাই সরকারকে আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদেরকে বাদ দিতে হবে।

হাসনাত বলেন, গত ১৬ বছরের দুঃশাসনে আওয়ামী লীগ টাকা পাচার করে দেশের ব্যাংকগুলোকে খালি করেছে। আপনারা জানেন একজন এমপিরও বিদেশে তিন শতাধিক বাড়ি রয়েছে। আমরা আজকের বৈঠকে সবাই একমত হয়েছি যে, দ্রুততম সময়ে সেসব এমপি-মন্ত্রীদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আমরা দেখছি বিদেশে বসেও তারা দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা না হলে, এভাবে তারা ষড়যন্ত্র করতেই থাকবে এবং একের পর এক দেশে নানা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের একতা এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তা নষ্ট করতে অনেকেই ষড়যন্ত্র করছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট হয়, আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নষ্ট হয় এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।

ছাত্র পরিচয়ে আন্দোলনে অনেকে নাশকতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক দিন যাবত দেখছি আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এমনকি একইসময়ে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। ছাত্র পরিচয়ে লুঙ্গি পরা ব্যক্তিরাও এসে শিক্ষার্থীদের পেটাচ্ছে, যাদেরকে যে কেউ দেখলেই বুঝতে সক্ষম তারা কারা।

আগামী এক সপ্তাহব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনে ঠেকাতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক মেলবন্ধন অক্ষুণ্ন রাখতেই আমরা সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।