কক্সবাজার ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতীক সংখ্যা ১০০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা

বাদ দেয়া দাঁড়িপাল্লাসহ ৩১টি প্রতীক আসছে ইসির তালিকায়

নিজস্ব সংবাদদাতা :
  • আপডেট সময় ১১:৩৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে
ডেস্ক রিপোর্ট:

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দলীয় প্রতীক তালিকা থেকে ২০১৭ সালে বাদ দেয়া হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। নির্বাচন কমিশনে জামায়াত নিবন্ধন ফিরে পেলে নতুন করে বিধি সংশোধনের মাধ্যমে ওই প্রতীকসহ আরো ৩১টি প্রতীক যুক্ত করতে চাচ্ছে নাসিরউদ্দিন কমিশন। ফলে প্রতীকের সংখ্যা ১০০টিতে উন্নীত হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা আশা করব, ইসি দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দেবে।

প্রতীক নিয়ে সার্বিক অবস্থা : ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইসিতে নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দে বারবার বিধি সংশোধনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। এই জটিলতা এড়াতে নির্বাচনী প্রতীকের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীক। ২০১৬ সালে আদালতের একটি ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্তের আলোকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিল করা হয়। এটি ছিল প্রশাসনিক পত্র, রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তৎকালীন ইসি এটি পেয়েছিল। সেটির আলোকে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। ওই সময় ৬৪টি প্রতীক দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এখন দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ অন্তত ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে প্রতীক সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে ইসি। এতে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীক বরাদ্দ সহজ হবে। বারবার বিধি সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ইসির তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে ৫০টি প্রতীক বরাদ্দ রয়েছে রাজনৈতিক দলের জন্য, যার মধ্যে স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও প্রতীক রয়েছে। বাকি ১৯টি প্রতীক রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের, যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ দিকে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সেখান থেকে যদি কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পায় তাহলে এ প্রতীকের সংখ্যা আরো কমে আসবে। এ জন্য প্রতীক বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর নতুন করে যে ৩১টি প্রতীক যুক্ত হবে তার মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও থাকবে।

কখন কয়টা প্রতীক ছিল : ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীক ছিল ৬৫টি, যার মধ্যে ৪০টি প্রতীক ছিল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য আর নতুন দল নিবন্ধন বিবেচনায় রেখে অতিরিক্ত ২৫টি প্রতীক রাখা হয়েছিল। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৪টি। ৩৯টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক তথ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৯টি। ৪৪টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

ইসির কর্মকর্তা মনির হোসেন যা বলছেন : ইসির নির্বাচনব্যবস্থা অনুবিভাগের-২ (নির্বাচন পরিচালনা-২) উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সাথে গতকাল মোবাইলে প্রতীকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পর তাদের প্রতীকটিও তালিকায় ছিল না। এরপর নতুন দল নিবন্ধন হওয়ায় দু’দফা গেজেট জারির মাধ্যমে সর্বশেষ প্রতীক সংখ্যা ৬৯টিতে উন্নীত হয়। নির্বাচনের জন্য বর্তমানে যে ৬৯টি তফসিলভুক্ত প্রতীক রয়েছে তার মধ্যে দাঁড়িপাল্লøা প্রতীক নেই। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ আরো ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রতীকের সংখ্যা ১০০টি বা এর বেশি বা কম হতে পারে তবে আমরা প্রতীকের সংখ্যা বাড়াব।

নির্বাচনী প্রতীক বৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসির মনির হোসেন বলেন, তফসিলে যে প্রতীকগুলো ছিল সেখান থেকে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে বরাদ্দ দিতে দিতে কমে গেছে। এ জন্য আমরা একসাথে প্রতীকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সবগুলো প্রতীককে একটি তফসিলে রাখব। তিনি বলেন, আমাদেরকে যাতে বারবার গেজেট করতে এবং বিধি পরিবর্তন করতে না হয়। কারণ আমরা যদি দু’টি তফসিলে প্রতীক রাখি, একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এবং আরেকটি স্বতন্ত্রের জন্য, তাহলে নতুন দল নিবন্ধিত হলে স্বতন্ত্র তালিকা থেকে প্রতীক তাদেরকে দিতে পারব।

তিনি বলেন, আগামীতে যদি নতুন আরেকটি দল নিবন্ধন পায়, তাহলে কিন্তু আমাদের দু’টি তফসিলই সংশোধন করতে হবে। আর তফসিল সংশোধন মানে হলো বিধি সংশোধন আর এটি লম্বা প্রক্রিয়া। তার চেয়ে বরং একই জায়গায় ১০০টি প্রতীক যদি থাকে, তাহলে যেগুলো রাজনৈতিক দলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে সেগুলো ছাড়া অবশিষ্ট প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্ররা নির্বাচন করবে। এতে বারবার আমাদের তফসিলও পরিবর্তন করা লাগবে না। বিধি বারবার সংশোধন এড়ানোর জন্য প্রতীক বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা।

কমিশনার মো: সানাউল্লাহ যা বলেছেন : উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ গণমাধ্যমকে সম্প্রতি জানান, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেয়া হবে। অর্থাৎ তারা দলীয় নিবন্ধন এবং দলীয় প্রতীক দু’টিই ফেরত পাবেন। তিনি জানান, অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবে, সে ব্যবস্থা ইসি গ্রহণ করছে। তবে দলীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে একটি দাফতরিক প্রক্রিয়া আছে, এ জন্য একটু সময় লাগবে।

জামায়াতে ইসলামী যা বলছে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, উচ্চ আদালত থেকে যে রায় দেয়া হয়েছে ইসির উচিত বিলম্ব না করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। দলের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও অন্যায়ভাবে নিয়ে নিয়েছে। যে কেউ রেজুলেশন পাঠাল আর ইসি সেটি অনুযায়ী নিবন্ধন বাতিল করল।

এটা আরেকটা অন্যায়। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর আদালতের ওপর কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকায় আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। তাই আমরা আদালত থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে। আদালত তার রায়ে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রতীক সংখ্যা ১০০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা

বাদ দেয়া দাঁড়িপাল্লাসহ ৩১টি প্রতীক আসছে ইসির তালিকায়

আপডেট সময় ১১:৩৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট:

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দলীয় প্রতীক তালিকা থেকে ২০১৭ সালে বাদ দেয়া হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। নির্বাচন কমিশনে জামায়াত নিবন্ধন ফিরে পেলে নতুন করে বিধি সংশোধনের মাধ্যমে ওই প্রতীকসহ আরো ৩১টি প্রতীক যুক্ত করতে চাচ্ছে নাসিরউদ্দিন কমিশন। ফলে প্রতীকের সংখ্যা ১০০টিতে উন্নীত হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা আশা করব, ইসি দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দেবে।

প্রতীক নিয়ে সার্বিক অবস্থা : ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইসিতে নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দে বারবার বিধি সংশোধনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। এই জটিলতা এড়াতে নির্বাচনী প্রতীকের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীক। ২০১৬ সালে আদালতের একটি ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্তের আলোকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিল করা হয়। এটি ছিল প্রশাসনিক পত্র, রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তৎকালীন ইসি এটি পেয়েছিল। সেটির আলোকে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। ওই সময় ৬৪টি প্রতীক দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এখন দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ অন্তত ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে প্রতীক সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে ইসি। এতে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীক বরাদ্দ সহজ হবে। বারবার বিধি সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ইসির তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে ৫০টি প্রতীক বরাদ্দ রয়েছে রাজনৈতিক দলের জন্য, যার মধ্যে স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও প্রতীক রয়েছে। বাকি ১৯টি প্রতীক রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের, যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ দিকে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সেখান থেকে যদি কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পায় তাহলে এ প্রতীকের সংখ্যা আরো কমে আসবে। এ জন্য প্রতীক বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর নতুন করে যে ৩১টি প্রতীক যুক্ত হবে তার মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও থাকবে।

কখন কয়টা প্রতীক ছিল : ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীক ছিল ৬৫টি, যার মধ্যে ৪০টি প্রতীক ছিল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য আর নতুন দল নিবন্ধন বিবেচনায় রেখে অতিরিক্ত ২৫টি প্রতীক রাখা হয়েছিল। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৪টি। ৩৯টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক তথ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিলভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা ছিল ৬৯টি। ৪৪টি প্রতীক বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য বরাদ্দ ছিল এবং ২৫টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন দলের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

ইসির কর্মকর্তা মনির হোসেন যা বলছেন : ইসির নির্বাচনব্যবস্থা অনুবিভাগের-২ (নির্বাচন পরিচালনা-২) উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সাথে গতকাল মোবাইলে প্রতীকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পর তাদের প্রতীকটিও তালিকায় ছিল না। এরপর নতুন দল নিবন্ধন হওয়ায় দু’দফা গেজেট জারির মাধ্যমে সর্বশেষ প্রতীক সংখ্যা ৬৯টিতে উন্নীত হয়। নির্বাচনের জন্য বর্তমানে যে ৬৯টি তফসিলভুক্ত প্রতীক রয়েছে তার মধ্যে দাঁড়িপাল্লøা প্রতীক নেই। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ আরো ৩১টি নতুন প্রতীক যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রতীকের সংখ্যা ১০০টি বা এর বেশি বা কম হতে পারে তবে আমরা প্রতীকের সংখ্যা বাড়াব।

নির্বাচনী প্রতীক বৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসির মনির হোসেন বলেন, তফসিলে যে প্রতীকগুলো ছিল সেখান থেকে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে বরাদ্দ দিতে দিতে কমে গেছে। এ জন্য আমরা একসাথে প্রতীকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সবগুলো প্রতীককে একটি তফসিলে রাখব। তিনি বলেন, আমাদেরকে যাতে বারবার গেজেট করতে এবং বিধি পরিবর্তন করতে না হয়। কারণ আমরা যদি দু’টি তফসিলে প্রতীক রাখি, একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এবং আরেকটি স্বতন্ত্রের জন্য, তাহলে নতুন দল নিবন্ধিত হলে স্বতন্ত্র তালিকা থেকে প্রতীক তাদেরকে দিতে পারব।

তিনি বলেন, আগামীতে যদি নতুন আরেকটি দল নিবন্ধন পায়, তাহলে কিন্তু আমাদের দু’টি তফসিলই সংশোধন করতে হবে। আর তফসিল সংশোধন মানে হলো বিধি সংশোধন আর এটি লম্বা প্রক্রিয়া। তার চেয়ে বরং একই জায়গায় ১০০টি প্রতীক যদি থাকে, তাহলে যেগুলো রাজনৈতিক দলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে সেগুলো ছাড়া অবশিষ্ট প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্ররা নির্বাচন করবে। এতে বারবার আমাদের তফসিলও পরিবর্তন করা লাগবে না। বিধি বারবার সংশোধন এড়ানোর জন্য প্রতীক বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা।

কমিশনার মো: সানাউল্লাহ যা বলেছেন : উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ গণমাধ্যমকে সম্প্রতি জানান, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেয়া হবে। অর্থাৎ তারা দলীয় নিবন্ধন এবং দলীয় প্রতীক দু’টিই ফেরত পাবেন। তিনি জানান, অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবে, সে ব্যবস্থা ইসি গ্রহণ করছে। তবে দলীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে একটি দাফতরিক প্রক্রিয়া আছে, এ জন্য একটু সময় লাগবে।

জামায়াতে ইসলামী যা বলছে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, উচ্চ আদালত থেকে যে রায় দেয়া হয়েছে ইসির উচিত বিলম্ব না করে দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। দলের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাও অন্যায়ভাবে নিয়ে নিয়েছে। যে কেউ রেজুলেশন পাঠাল আর ইসি সেটি অনুযায়ী নিবন্ধন বাতিল করল।

এটা আরেকটা অন্যায়। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর আদালতের ওপর কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকায় আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। তাই আমরা আদালত থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে। আদালত তার রায়ে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।