রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুতেরাঁর একদিন
সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ

- আপডেট সময় ০৪:০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
- / ১১ বার পড়া হয়েছে
ডেস্ক নিউজ:
ব্যস্ত সময় কাটালেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। শুক্রবার সকালে ঢাকায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টাসহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের সংস্কারে পাশে থাকায় প্রত্যয় প্রকাশ করেন। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টাসহ কক্সবাজার গিয়ে পরিদর্শন করেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন তিনি। পরিদর্শন শেষে গুতেরাঁ বলেন, নিজ দেশে ফিরে যেতে চান রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এজন্য মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের পর্যটন ও উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, আঁরা হতা হৈবল্যা নু আইয়্যি, অনরাত্তু জাইনতো আইস্যিদে। (আমরা কথা বলার জন্য আসিনি, আপনাদের কাছ থেকে জানতে এসেছি)।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আরও বলেন, আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।
নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসা করতে পারলে সকলের ভাগ্য বদলে যাবে। লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কিনা। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে।
তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন। স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে। তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।
বিকাল ৫টার দিকে সড়কপথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান ড. ইউনূস। সেখানে মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন। ইফতার শেষে সড়কপথেই কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা।
সূত্র: মানবজমিন