২৯ এপ্রিল স্মরণে শোক র্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
অরক্ষিত উপকূল রক্ষার দাবি

- আপডেট সময় ০৯:০৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
হুমায়ূন সিকদার
১৯৯১ সালে যেদিন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। মেরি এন্ নামক ঘুর্ণিঝড়ে দুঃসহ সে স্মৃতি এখনও কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে। ২৯ এপ্রিলের মতো ফের ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়ে আতংকিত থাকে উপকুলবাসী।
ঘটনার এতো বছর পরও নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপের স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না তারা।
অরক্ষিত উপকূল রক্ষার দাবিতে উপকূলীয় সংগঠন সমুহ কক্সবাজারস্হ কুতুবদিয়া সমিতি, উপকূলীয় উন্নয়ন ফোরাম, কুতুবদিয়া উন্নয়ন পরিষদ ও আইডিয়াল ইয়ুথ ফোরামের ব্যানারে শোক র্যালী, মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে শোকর্যালী বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুতুবদিয়া চতুর্পাশে সুপার ডাইকে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, পারাপারে ফেরি চালু ও কক্সবাজারে অবস্থানরত পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডস্হ কুতুবদিয়াপাড়াবাসীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানান উপকূলবাসী।
কুতুবদিয়া সমিতির আহবায়ক অধ্যাপক আহমদ ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হুমায়ুন সিকদারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও কুতুবদিয়া সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শামসুল আলম বাহাদুর, কুতুবদিয়া সমিতির সাবেক সভাপতি ও বড়ঘোপ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনম শহীদ উদ্দিন ছোটন, কুতুবদিয়া সমিতির সদস্য সচিব ও সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সমিতির সাবেক সহ সভাপতি আকতার কামাল আজাদ, দৈনিক হিমছড়ির সম্পাদক হাসানুর রশিদ, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা ও সমিতির সাবেক সহ সভাপতি শওকত ওসমান তালুকদার, এড. দেলোয়ার হোসাইন কুতুবী, সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য শিক্ষাবীদ এম এজাবতুল্লাহ কুতুবী, ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফুরকানুর রশিদ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল বশর বহদ্দার, নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান। পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সদস্য মাহবুবুল হক।
সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য কফিল উদ্দিন কুতুবী, ফসিহ উদ্দিন, আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ সিকদার, ছৈয়দ আলম, মাওলানা বদরুদ্দোজা কুতুবী, দিদারুল ইসলাম রুবেল, আতাউর রহমান কায়সার, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, নুরুল বশর বাদশা, নুরুল হোসাইন,শাহাদাত হোসেন মুন্নাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন পরবর্তী নৌ পরিবহন উপদেষ্টাকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট উপকূলবাসির দাবি —
কতিপয় বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ মালা —-
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ:
যেসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই বা দুর্বল, সেসব স্থানে সুপার ডাইকে মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
২. আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র:
প্রতিটি ইউনিয়নে ভূমিকম্প ও ঘুর্ণিঝড় সহনীয় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ জরুরি।
৩. ম্যানগ্রোভ বন ও সবুজ বেষ্টনী: উপকূলীয় এলাকায় গাছ লাগিয়ে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা তৈরি করা।
৪. ডিজিটাল আগাম সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা যেন মোবাইল ফোন, রেডিও, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত পৌঁছায়। উপকূলীয় এলাকায় কমিউনিটি – কোস্টাল রেডিও চালু করা উচিত।
৫. জরুরি সাড়া দল গঠন: দুর্যোগের সময় সেবা প্রদানে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক টীম প্রস্তুত রাখা দরকার।
৬. পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা: বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের জন্য টিউবওয়েল, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এবং ফিল্টার প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৭. দুর্যোগ শিক্ষা ও মহড়া: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে নিয়মিত দুর্যোগ সচেতনতা ও মহড়ার আয়োজন করা উচিত।
৮. বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা: কৃষি, মৎস্য ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। একটি জাতীয় শিক্ষা: সমন্বয় ও সুশাসনের প্রয়োজন ২৯ এপ্রিলের মতো বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শুধু অবকাঠামো নয়, দরকার কার্যকর নীতি, সমন্বিত পরিকল্পনা এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবী ও গণমাধ্যমের ভূমিকা জোরদার করা জরুরি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৮৯৭ সালে কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত হয় ১৭ হাজার ৫ শ মানুষ।
১৯৬০ সালে কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও নোয়াখালীতে ২১০ কি.মি. ঘন্টা গতি সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় ও ৫ মিটার উচ্ছতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ৬ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৬৩ সালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীতে ২০০ কি.মি. গতিসম্পন্ন ঝড়ে মারা যায় ১২ হাজার মানুষ। ১৯৬৫ সালে কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বরিশালে ১৬০ কি. মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১৯ হাজার মানুষ মারা যায়।
১৯৮৫ সালে কক্সবাজার চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নোয়াখালীতে ১৫৪ কি.মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছাসে ১২ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯১ সালে কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, পটুয়াখালী ও বরিশালে ২২৫ থেকে ২৬০ কি.মি বাতাসের গতিবেগে ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯৭ সালে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম ১৮০ কি.মি/ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ২ শত এর অধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়া ১৮২২, ১৮৭৬, ১৯৭০, ১৯৮৫, ১৯৮৮, ২০০৭ ও ২০০৯ সালে সিডর, নারগিস, হামুন, আইলাসহ বিভিন্ন ধরণের ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় এলাকার ২৬টি জেলায় চরম আঘাত হানে। তবে সবচেয়ে বেশি ৯১ সালের ২৯ এপ্রিল শতাব্দীর ভয়াবহ প্রলয়ঙ্করী-ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারের কুতুবদিয়াসহ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।যে স্মৃতি আজও কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে( সাব)
অরক্ষিত উপকূল রক্ষার দাবি
হুমায়ুন সিকদার
১৯৯১ সালে যেদিন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। মেরি এন্ নামক ঘুর্ণিঝড়ে দুঃসহ সে স্মৃতি এখনও কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে। ২৯ এপ্রিলের মতো ফের ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়ে আতংকিত থাকে উপকুলবাসী।
ঘটনার এতো বছর পরও নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপের স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না তারা।
অরক্ষিত উপকূল রক্ষার দাবিতে উপকূলীয় সংগঠন সমুহ কক্সবাজারস্হ কুতুবদিয়া সমিতি, উপকূলীয় উন্নয়ন ফোরাম, কুতুবদিয়া উন্নয়ন পরিষদ ও আইডিয়াল ইয়ুথ ফোরামের ব্যানারে শোক র্যালী, মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে শোকর্যালী বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুতুবদিয়া চতুর্পাশে সুপার ডাইকে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, পারাপারে ফেরি চালু ও কক্সবাজারে অবস্থানরত পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডস্হ কুতুবদিয়াপাড়াবাসীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানান উপকূলবাসী।
কুতুবদিয়া সমিতির আহবায়ক অধ্যাপক আহমদ ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হুমায়ুন সিকদারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও কুতুবদিয়া সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শামসুল আলম বাহাদুর, কুতুবদিয়া সমিতির সাবেক সভাপতি ও বড়ঘোপ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনম শহীদ উদ্দিন ছোটন, কুতুবদিয়া সমিতির সদস্য সচিব ও সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সমিতির সাবেক সহ সভাপতি আকতার কামাল আজাদ, দৈনিক হিমছড়ির সম্পাদক হাসানুর রশিদ, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা ও সমিতির সাবেক সহ সভাপতি শওকত ওসমান তালুকদার, এড. দেলোয়ার হোসাইন কুতুবী, সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য শিক্ষাবীদ এম এজাবতুল্লাহ কুতুবী, ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফুরকানুর রশিদ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল বশর বহদ্দার, নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান। পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সদস্য মাহবুবুল হক।
সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য কফিল উদ্দিন কুতুবী, ফসিহ উদ্দিন, আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ সিকদার, ছৈয়দ আলম, মাওলানা বদরুদ্দোজা কুতুবী, দিদারুল ইসলাম রুবেল, আতাউর রহমান কায়সার, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, নুরুল বশর বাদশা, নুরুল হোসাইন,শাহাদাত হোসেন মুন্নাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন পরবর্তী নৌ পরিবহন উপদেষ্টাকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট উপকূলবাসির দাবি —
কতিপয় বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ মালা —-
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ:
যেসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই বা দুর্বল, সেসব স্থানে সুপার ডাইকে মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
২. আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র:
প্রতিটি ইউনিয়নে ভূমিকম্প ও ঘুর্ণিঝড় সহনীয় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ জরুরি।
৩. ম্যানগ্রোভ বন ও সবুজ বেষ্টনী: উপকূলীয় এলাকায় গাছ লাগিয়ে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা তৈরি করা।
৪. ডিজিটাল আগাম সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা যেন মোবাইল ফোন, রেডিও, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত পৌঁছায়। উপকূলীয় এলাকায় কমিউনিটি – কোস্টাল রেডিও চালু করা উচিত।
৫. জরুরি সাড়া দল গঠন: দুর্যোগের সময় সেবা প্রদানে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক টীম প্রস্তুত রাখা দরকার।
৬. পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা: বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের জন্য টিউবওয়েল, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এবং ফিল্টার প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৭. দুর্যোগ শিক্ষা ও মহড়া: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে নিয়মিত দুর্যোগ সচেতনতা ও মহড়ার আয়োজন করা উচিত।
৮. বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা: কৃষি, মৎস্য ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। একটি জাতীয় শিক্ষা: সমন্বয় ও সুশাসনের প্রয়োজন ২৯ এপ্রিলের মতো বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শুধু অবকাঠামো নয়, দরকার কার্যকর নীতি, সমন্বিত পরিকল্পনা এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবী ও গণমাধ্যমের ভূমিকা জোরদার করা জরুরি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৮৯৭ সালে কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত হয় ১৭ হাজার ৫ শ মানুষ।
১৯৬০ সালে কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও নোয়াখালীতে ২১০ কি.মি. ঘন্টা গতি সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় ও ৫ মিটার উচ্ছতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ৬ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৬৩ সালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীতে ২০০ কি.মি. গতিসম্পন্ন ঝড়ে মারা যায় ১২ হাজার মানুষ। ১৯৬৫ সালে কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বরিশালে ১৬০ কি. মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১৯ হাজার মানুষ মারা যায়।
১৯৮৫ সালে কক্সবাজার চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নোয়াখালীতে ১৫৪ কি.মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছাসে ১২ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯১ সালে কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, পটুয়াখালী ও বরিশালে ২২৫ থেকে ২৬০ কি.মি বাতাসের গতিবেগে ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯৭ সালে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম ১৮০ কি.মি/ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ২ শত এর অধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়া ১৮২২, ১৮৭৬, ১৯৭০, ১৯৮৫, ১৯৮৮, ২০০৭ ও ২০০৯ সালে সিডর, নারগিস, হামুন, আইলাসহ বিভিন্ন ধরণের ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় এলাকার ২৬টি জেলায় চরম আঘাত হানে। তবে সবচেয়ে বেশি ৯১ সালের ২৯ এপ্রিল শতাব্দীর ভয়াবহ প্রলয়ঙ্করী-ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারের কুতুবদিয়াসহ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দাবি
হুমায়ুন সিকদার
১৯৯১ সালে যেদিন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। মেরি এন্ নামক ঘুর্ণিঝড়ে দুঃসহ সে স্মৃতি এখনও কাঁদায় স্বজনহারা মানুষগুলোকে। ২৯ এপ্রিলের মতো ফের ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়ে আতংকিত থাকে উপকুলবাসী।
ঘটনার এতো বছর পরও নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপের স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না তারা।
অরক্ষিত উপকূল রক্ষার দাবিতে উপকূলীয় সংগঠন সমুহ কক্সবাজারস্হ কুতুবদিয়া সমিতি, উপকূলীয় উন্নয়ন ফোরাম, কুতুবদিয়া উন্নয়ন পরিষদ ও আইডিয়াল ইয়ুথ ফোরামের ব্যানারে শোক র্যালী, মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে শোকর্যালী বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুতুবদিয়া চতুর্পাশে সুপার ডাইকে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, পারাপারে ফেরি চালু ও কক্সবাজারে অবস্থানরত পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডস্হ কুতুবদিয়াপাড়াবাসীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানান উপকূলবাসী।
কুতুবদিয়া সমিতির আহবায়ক অধ্যাপক আহমদ ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হুমায়ুন সিকদারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও কুতুবদিয়া সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শামসুল আলম বাহাদুর, কুতুবদিয়া সমিতির সাবেক সভাপতি ও বড়ঘোপ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনম শহীদ উদ্দিন ছোটন, কুতুবদিয়া সমিতির সদস্য সচিব ও সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সমিতির সাবেক সহ সভাপতি আকতার কামাল আজাদ, দৈনিক হিমছড়ির সম্পাদক হাসানুর রশিদ, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা ও সমিতির সাবেক সহ সভাপতি শওকত ওসমান তালুকদার, এড. দেলোয়ার হোসাইন কুতুবী, সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য শিক্ষাবীদ এম এজাবতুল্লাহ কুতুবী, ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফুরকানুর রশিদ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল বশর বহদ্দার, নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান। পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সদস্য মাহবুবুল হক।
সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য কফিল উদ্দিন কুতুবী, ফসিহ উদ্দিন, আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ সিকদার, ছৈয়দ আলম, মাওলানা বদরুদ্দোজা কুতুবী, দিদারুল ইসলাম রুবেল, আতাউর রহমান কায়সার, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, নুরুল বশর বাদশা, নুরুল হোসাইন,শাহাদাত হোসেন মুন্নাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন পরবর্তী নৌ পরিবহন উপদেষ্টাকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট উপকূলবাসির দাবি —
কতিপয় বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ মালা —-
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ:
যেসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই বা দুর্বল, সেসব স্থানে সুপার ডাইকে মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
২. আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র:
প্রতিটি ইউনিয়নে ভূমিকম্প ও ঘুর্ণিঝড় সহনীয় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ জরুরি।
৩. ম্যানগ্রোভ বন ও সবুজ বেষ্টনী: উপকূলীয় এলাকায় গাছ লাগিয়ে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা তৈরি করা।
৪. ডিজিটাল আগাম সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা যেন মোবাইল ফোন, রেডিও, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত পৌঁছায়। উপকূলীয় এলাকায় কমিউনিটি – কোস্টাল রেডিও চালু করা উচিত।
৫. জরুরি সাড়া দল গঠন: দুর্যোগের সময় সেবা প্রদানে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক টীম প্রস্তুত রাখা দরকার।
৬. পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা: বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের জন্য টিউবওয়েল, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এবং ফিল্টার প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৭. দুর্যোগ শিক্ষা ও মহড়া: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে নিয়মিত দুর্যোগ সচেতনতা ও মহড়ার আয়োজন করা উচিত।
৮. বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা: কৃষি, মৎস্য ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। একটি জাতীয় শিক্ষা: সমন্বয় ও সুশাসনের প্রয়োজন ২৯ এপ্রিলের মতো বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শুধু অবকাঠামো নয়, দরকার কার্যকর নীতি, সমন্বিত পরিকল্পনা এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবী ও গণমাধ্যমের ভূমিকা জোরদার করা জরুরি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৮৯৭ সালে কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত হয় ১৭ হাজার ৫ শ মানুষ।
১৯৬০ সালে কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও নোয়াখালীতে ২১০ কি.মি. ঘন্টা গতি সম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় ও ৫ মিটার উচ্ছতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ৬ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৬৩ সালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীতে ২০০ কি.মি. গতিসম্পন্ন ঝড়ে মারা যায় ১২ হাজার মানুষ। ১৯৬৫ সালে কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বরিশালে ১৬০ কি. মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১৯ হাজার মানুষ মারা যায়।
১৯৮৫ সালে কক্সবাজার চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নোয়াখালীতে ১৫৪ কি.মি. ঘন্টা ৪ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছাসে ১২ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯১ সালে কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, পটুয়াখালী ও বরিশালে ২২৫ থেকে ২৬০ কি.মি বাতাসের গতিবেগে ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৯৯৭ সালে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম ১৮০ কি.মি/ঘন্টা ৫ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন জলোচ্ছাসে ২ শত এর অধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়া ১৮২২, ১৮৭৬, ১৯৭০, ১৯৮৫, ১৯৮৮, ২০০৭ ও ২০০৯ সালে সিডর, নারগিস, হামুন, আইলাসহ বিভিন্ন ধরণের ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় এলাকার ২৬টি জেলায় চরম আঘাত হানে। তবে সবচেয়ে বেশি ৯১ সালের ২৯ এপ্রিল শতাব্দীর ভয়াবহ প্রলয়ঙ্করী-ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারের কুতুবদিয়াসহ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।